জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের ভবন ক্রয়: সমঝোতার শুরুতেই হোঁচট
নিউ ইয়র্কে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের ভবন কেনাকে কেন্দ্র করে সুস্পষ্টভাবেই বিভক্ত হয়ে পড়েছে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরি কমিটি ও সাধারণ জালালাবাদবাসী।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এই অচলাবস্থা এখন চরম আকার ধারণ করেছে। এর নিরসনে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক কর্মকর্তারা সমঝোতার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই উদ্যোগও এখন প্রশ্নের সম্মুখীন। এর জন্য দায়ী করা হচ্ছে সংগঠনের বর্তমান সভাপদি বদরুল হোসেন খানকে।
তারা আরও বলেন, বদরুল হোসেন খান আগুনের মধ্যে ঘি ঢেলে দিয়েছেন। যখনই সাবেক কর্মকর্তারা সমঝোতার উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসেন। তিনি তখন প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন।
অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি সৈয়দ শতকত আলী গত ৬ ফেব্রুয়ারি জালালাবাদ ভবনে সাংবাদিকদের বলেন, আমি বর্তমান কমিটির সভাপতি বদরুল হোসেন খান, সাবেক সভাপতি আজমল হোসেন কুনু, সাবেক সভাপতি বদরুন নাহার খান মিতা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহমদ জিল্লুর সঙ্গে। তাদের সঙ্গে কথা বলার পর তাদের মতামতের ভিত্তিকেই আমি একজন আইনজীবীর সাথে কথা বলেছি।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সবার মনে রাখতে হবে এটা জালালাবাদবাসীর সংগঠন, গুটিকতেক ব্যক্তির সংগঠন নয়।’ তিনি সভাপতির কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে বলেন, তারা এই সংগঠনকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। তিনি নিজেও গঠনতন্ত্র মানছেন না।
তিনি বলেন, সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলামকে শো কজ করা হয়েছে। তিনি সেই শোকজের উত্তরও দিয়েছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত না তাকে বহিষ্কার করা হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক। তাকে বাদ দিয়ে সভাপতি কীভাবে কার্যকরি কমিটির সভা ডাকেন এবং নিয়ম বহিভর্‚তভাবে ট্রাস্টি বোর্ড গ্রহণ করেছেন। সভাপতির কার্যকলাপে মনে হচ্ছে তিনি সমঝোতা চান না। তিনি কি সমঝোতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন? তিনি কেন সাধারণ সম্পাদককে বাদ দিয়ে ট্রাস্টি বোর্ড করলেন। তবে আমি এখনো সমঝোতার পক্ষে। আমি আমার কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাব। আগামীতে আপনাদের আপডেট জানাবো।
সাবেক সভাপতি ময়নুল হক চৌধুরী হেলাল বলেন, আমরা সমঝোতার পক্ষে। ভবন ক্রয়ের সময় যদি কোনো ভুলত্রুটি হয়ে থাকে আমরা আলোচনা করে তা সংশোধন করব।
তিনি আরও বলেন, গত সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত ছিল আমরা ভবন ক্রয় করব। সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ভবন কিনেছি। এতে কারো ক্ষোভের তো কারণ দেখি না। এই ভবনটি আমাদের স্বপ্ন পূরণ করেছে। তা ছাড়া এটা লাভজনক ভবন। এই ভবনের মর্টগেজ আসে পাঁচ হাজার চারশ’ ডলার। আর এই ভবন থেকে মাসে আয় হবে ছয় হাজার আটশ’ ডলার। তাছাড়া নিচের ফ্লোরটি আমরা বিনা পয়সা ব্যবহার করতে পারছি। এখনও সময় আছে সমঝোতার। যে কোনো মূল্যে আমরা ভবন চাই।
কার্যকরি সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, আমরা এই অচলাবস্থা দেখতে চাই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কুৎসা রটনা এবং জালালাবাদবাসীর সম্মানহানি দেখতে চাই না। তিনি সাবেক কর্মকর্তাদের বৈঠকের আহ্বান জানান।
ইয়ামীন রশীদ সভাপতি এবং তার অনুসারীদের কর্মকাণ্ডে মনে হয় তারা সমঝোতা চায় না। আমরা তাদের পেছনে আর কত ঘুরব। আমি মনে করি, একটি কমিটি করা হোক। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কেন সাধারণ সভা স্থগিত করা হলো? সাধারণ সভা স্থগিত করার মধ্যে ষড়যন্ত্র রয়েছে। সাধারণ সভা হলে এই সমস্যার সমাধান হতো এই বিশ্বাস আমার রয়েছে। তিনি বলেন, যে কোনো মূল্যে আমরা ভবন চাই।
সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সব সময় প্রস্তুত ভবন দেওয়ার জন্য।’ বর্তমান সভাপতি এবং কোষাধ্যক্ষ চাইলে রিফাইন্যান্স করে তাদের নাম মর্টগেজে ঢোকাতে পারে। আমার কোনো অসুবিধা নেই। আবার ট্রাস্টি করেও ভবনকে ঋণ মুক্ত করা যায়। প্রতিটি থানা থেকে ট্রাস্টি নিয়োগ করা যায়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন সাবেক কর্মকর্তা মওলানা সাইফুল আলম সিদ্দিকী, এম এ করিম, অ্যাডভোকেট আক্তারুজ্জামান, সোহেল, বাবু, ইয়ামীন রশিদ, মোহাম্মদ মঞ্জুর, হাসান আলী প্রমুখ।