নতুন যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরও সুদানে বিমান হামলা
সাত দিনের যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও সুদানে আরো বিমান হামলা ও সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। দেশটিতে যুদ্ধবিরতির সর্বশেষ প্রচেষ্টার আশাও কমে গিয়েছে। সুদানের সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) সাত দিনের মানবিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল। গতকাল শনিবার সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) এই তথ্য জানায়।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরও এই তথ্য নিশ্চিত করেছিল।
নতুন চুক্তিটি যুদ্ধরত পক্ষগুলো জেদ্দায় স্বাক্ষরও করেছে। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা ইতিমধ্যে রাজধানী খার্তুম এবং অন্য এলাকায় আরো সংঘর্ষের কথা জানিয়েছে। সহিংসতা পাঁচ সপ্তাহ আগে শুরু হয়েছিল।
সেনাবাহিনী এবং একটি আধাসামরিক গোষ্ঠীর নেতাদের মধ্যে ক্ষমতার লড়াইয়ের ফলে শুরু হয়েছিল এই যুদ্ধ। উত্তর-পূর্ব আফ্রিকার দেশটিতে কয়েকবার যুদ্ধবিরতির ঘোষণা করেও তা ব্যর্থ হয়।
নতুন যুদ্ধবিরতি নিয়ে সবাই বেশ আশাবাদী ছিল, যা সৌদি আরব এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় আনুষ্ঠানিক আলোচনার পরে নেওয়া হয়েছিল। গত শনিবার জারি করা মার্কিন-সৌদি বিবৃতি অনুসারে নতুন চুক্তিটি যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে শুরু হবে।
পূর্ববর্তী যুদ্ধবিরতির ব্যর্থতার কথা মাথায় রেখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু চুক্তি কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) একটি যুদ্ধ বার্তা জারি করে। জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো, যিনি হেমেদতি নামে বেশি পরিচিত। তিনি একটি অডিও বার্তায় বলেন, ‘আমরা এই অভ্যুত্থান শেষ না করা পর্যন্ত সৈন্যরা পিছু হটবে না।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা এএফপি বার্তা সংস্থাকে উত্তর খার্তুমে যুদ্ধবিরতি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়ার কয়েক মিনিট পরে শহরের পূর্বে বিমান হামলার কথা জানিয়েছেন।
এদিকে বেসামরিক মানুষ সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে, তারা খার্তুমের দুটি শহর ওমদুরমান এবং বাহরিতে গোলাগুলির শব্দ শুনেছে। কিন্তু তারা যুদ্ধবিরতির বড় ধরনের লঙ্ঘনের প্রতিবেদন করেনি।
১৫ এপ্রিল খার্তুমে সংঘর্ষ শুরু হয়। এর কয়েক দিন পর আরএসএফ সদস্যদের পুরো দেশে মোতায়েন করা হয়। যেটিকে দেশটির সেনাবাহিনী একটি হুমকি হিসেবে দেখেছিল। মূল বিরোধটি জেনারেল দাগালো এবং সামরিক প্রধান, জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের মধ্যে শুরু হয়। যিনি ২০১৯ সালে রাষ্ট্রপতি ওমর আল-বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে সুদানের ডি-ফ্যাক্টো নেতা ছিলেন।
এ পর্যন্ত সুদান যুদ্ধে শত শত লোক নিহত হয়েছে। জাতিসংঘ পরিস্থিতি আরো খারাপ হওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছে। তাদের অনেক কার্যক্রমও বন্ধ করতে হয়েছে। যেখানে বিপুলসংখ্যক মানুষ ইতিমধ্যেই সংঘাতের আগে সাহায্যের জন্য জাতিসংঘরে ওপর নির্ভর করেছিল। এদিকে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে এক মিলিয়নেরও বেশি মানুষ সুদানে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে।
সূত্র : বিবিসি