মাশা আমিনির মৃত্যুর খবর প্রচার করা দুই নারী সাংবাদিকের জামিন
ইরানে মাশা আমিনির মৃত্যু নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ এবং প্রকাশ করার কারণে দুই নারী সাংবাদকিকে প্রেপ্তার করেছিল দেশটির সরকার। প্রায় এক বছরের বেশি সময় কারাবন্দি থাকার পর তাদের মুক্তি দেওয়া হয়ে তাদের। তাঁরা মাহসা আমিনির মৃত্যু নিয়ে সংবাদ প্রচার করার পর ইরানজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। ইরান হিউম্যান রাইটস জানিয়েছিল, সমগ্র দেশেজুড়ে চলা বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ৪৭৬ জন নিহত হয়েছিল।
ওই দুই নারী সাংবাদিকরা হলেন, নিলুফার হামেদি (৩১) এবং এলাহেহ মোহাম্মদী (৩৬), তাঁদের জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে ইরানি মিডিয়া জানিয়েছে। প্রতিবেদকরা সাজার বিরুদ্ধে আপিল করছেন এবং আদালতের সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত কারাগারের বাইরে থাকবেন বলে খবরে বলা হয়েছে।
মাশা আমিনি নামে ওই ইরানি নারীর ২০২২ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বর ২২ বছর বয়সে মৃত্যু হয়েছিল। আমিনিকে ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে আটকের পর পুলিশ হেফাজতে মারা যান।
হিজাব না পরার অভিযোগে ইরান তেহরানের নৈতিকতা পুলিশ মাশা আমিনিকে গ্রেপ্তার করেছিল। ইরানের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মৃত্যুর কারণ হিসেবে বলছে, থানায় তাঁর হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে মেঝেতে পড়ে যান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি কোমায় চলে যায় এবং তাঁর মৃত্যু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা তখন বলেছিলেন, প্রচণ্ড মারধর করা হয়েছিল মাশাকে এবং পুলিশের বর্বরতার ফলে তাঁর মৃত্যু হয়েছির।
তবে ইরানি কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছিল। মেডিক্যাল পরীক্ষা এবং কয়েকজন পর্যবেক্ষক মনে করেন, গ্রেপ্তারের পর মাথায় আঘাত পাওয়ায় কারণে মাশা আমিনির মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ ঘটেছিল বা স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এদিকে জাতিসংঘের একজন মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ বলেছেন, নৈতিকতা পুলিশের মারধরের ফলেই মাশা মারা গেছেন।
মাশা আমিনির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পর প্রথম বিক্ষোভ শুরু হয় এবং তা দ্রুত দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পরপরই ওই দুই নারী সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
মার্কিন সরকারকে সহযোগিতা এবং জাতীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে যোগসাজশের অভিযোগ আনা হয় তাঁদের বিরুদ্ধে। তাঁদের যথাক্রমে ১৩ ও ১২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জামিন ২ লাখ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে এবং তাদের দেশ ত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
সূত্র: বিবিসি