Our Concern
Ruposhi Bangla
Hindusthan Surkhiyan
Radio Bangla FM
Third Eye Production
Anuswar Publication
Ruposhi Bangla Entertainment Limited
Shah Foundation
Street Children Foundation
October 16, 2024
হেডলাইন
Homeপ্রধান সংবাদযুদ্ধবাজ ট্রাম্প যুদ্ধ চাইছেন তার একলার স্বার্থেই

যুদ্ধবাজ ট্রাম্প যুদ্ধ চাইছেন তার একলার স্বার্থেই

যুদ্ধবাজ ট্রাম্প যুদ্ধ চাইছেন তার একলার স্বার্থেই

 

 

কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্র কি যুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে দিল? ওদিকে আয়াতুল্লাহ আলী খোমেনিও প্রতিশোধের ঘোষণা দিয়েছেন । যুদ্ধ কি  অনিবার্য তাহলে? যুক্তরাষ্ট্রর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কি তাহলে যুদ্ধই চান?

নিজের দেশে ভালো নেই ট্রাম্প। এই জানুয়ারিতেই তো সিনেটে ট্রাম্পের ইমপিচমেন্টের বিষয়টি আলোচনায় ওঠার কথা। আর সপ্তাহখানেক পরেই। সিনেটের ও দেশের মানুষের সেখান থেকে দৃষ্টি সরাতেই কি ইরাকে ড্রোন হামলা চালিয়ে জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা করলেন ট্রাম্প? কিন্তু নজর কি আসলে সরাতে পেরেছেন?

ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা প্রত্যাশিতভাবেই অন্যায় এ হামলায় এলিট বাহিনীর প্রধানকে হত্যার প্রতিশোধ নিতে চেয়েছেন। অন্যদিকে সোলাইমানি নিহত হওয়ার পর পরই নিজের টুইটারে মার্কিন পতাকা শেয়ার করে আনন্দ প্রকাশ করেছেন ‘অ্যামেরিকা ফার্স্ট’ স্লোগানের মাধ্যমে উগ্রতা, বিভেদ আর ঔদ্ধত্যের প্রবক্তা হয়ে ওঠা ট্রাম্প।

ট্রাম্প যে ইচ্ছে করেই যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করে ফেলেছেন সেটি বোঝার জন্যে বেশীদূর যাওয়ার দরকার নেই। দু দিন আগেই নিজের এক টুইট বার্তায় ট্রাম্প লিখেছিলেন, বাগদাদের মার্কিন দূতাবাসে ‘কোনও প্রাণহানি বা আমাদের কোনও ক্ষয়ক্ষতি হলে তার জন্য ইরানই দায়ী থাকবে। সেজন্য তাদেরকে চড়া মূল্য দিতে হবে। এটি কোনও সতর্কবার্তা নয়, এটি হুমকি।’

আয়াতুল্লাহ আলী খোমেনি তার জবাব কড়া ভাষায় দিলেও মার্কিন দূতাবাস থেকে বিক্ষোভকারীরা সরে গিয়েছিল। কিন্তু তারপর তো পরিস্থিতি ধীরে ধীরে শান্ত হওয়ার কথা। ট্রাম্প চাইলে হয়ত তাই হতো? কিন্তু কংগ্রেসকে কিছু না জানিয়ে তিনি হামলার নির্দেশ দিয়ে দিলেন পেন্টাগনকে।

নির্দেশের পর আর ইরানের এলিট বাহিনীর প্রধান জেনারেল কাসেম সোলাইমানি নিহত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের একটা পতাকা টুইট করে দিলেন।

মধ্যপ্রাচ্যে এখন শোকের ছায়া কেটে গিয়ে তার জায়গা নিয়েছে ক্ষোভ। অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে পরিস্থিতি। এর প্রভাব সারা বিশ্বেই ছড়িয়ে পড়বে। ইতোমধ্যেই তেলের দাম বাড়তে শুরু করেছে। মার্কিন হামলায় সোলাইমানির সঙ্গে ইরাকি কমান্ডার আবু মাহদি আল মুহান্দিসসহ আরও চারজন নিহত হয়েছেন। ফলে ইরাকও ক্ষুব্ধ। ইরাকের প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদেল মাহদি ভয়াবহ যুদ্ধের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। যুদ্ধ হলে সবচেয়ে বেশি লাভ হবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের। দেশে তিনি যে কিছুটা কোণঠাসা অবস্থায় পড়েছিলেন সে অবস্থা হয়ত খানিকটা কাটিয়ে উঠতে পারবেন তিনি। আর লাভ হবে অস্ত্র বিক্রেতাদের।

তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে ইরান আর ইরাকের। দেশ দুটোর সাধারণ মানুষের। আশির দশকে প্রায় আট বছর নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ করেছে তারা। সেই যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরেও ইরাকের মানুষ বেশীদিন শান্তিতে থাকতে পারে নি? ১৯৯০ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত চলা উপসাগরীয় যুদ্ধের ক্ষত শুকানোর আগেই ২০০৩ সালে আবারও পড়ে যুদ্ধের খপ্পরে। আট বছরের সেই যুদ্ধে মেসোপটেমিয়া সভ্যতার দেশটি আজ প্রায় ধংসস্তূপ।

যুদ্ধ হলে বাংলাদেশের জন্যেও বিপদ। মধ্যপ্রাচ্যে কাজ করছেন এমন বাংলাদেশিরা সংকটে পড়বেন। এর প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও পড়বে।

প্রাক মধ্যযুগ, মধ্যযুগ, আধুনিক যুগ- পৃথিবীর সকল যেসব যত যুদ্ধ হয়েছে, সেগুলো কেবল মানবতার ক্ষতিই করেছে। কোটি কোটি মানুষ মরেছে। ধ্বংস হয়েছে ভূখণ্ড, ভেঙে পড়েছে অর্থনীতি? ভেঙেছেন মানবতা।

যুদ্ধবাজ ট্রাম্প যুদ্ধ চাইছেন নিজের স্বার্থে। এ স্বার্থ তার একলার। আমেরিকার জনগণের নয়। তারা এখন ট্রাম্পের বিরোধিতায় রাজপথে নেমেছে। তারা যুদ্ধ চায় না। চাই না আমরাও। বস্তুত পৃথিবীর সকল সাধারণ জনগণই যুদ্ধর বিপক্ষে। শান্তির  পক্ষে তারা। আমরাও। আমরা তাই ট্রাম্পের মতো এমন শাসক চাই না।

 

লেখক : সাংবাদিক

Share With:
Rate This Article
No Comments

Leave A Comment