শ্রীলংকার ‘ভল্টিং কুইন’ এখন দুবাইয়ের গৃহকর্মী
শ্রীলংকার শীর্ষস্থানীয় ক্রীড়াবিদ সাচিনি পেরেরা (২৪)। পোল ভল্টে জাতীয় রেকর্ড গড়েছিলেন। শীলংকার ‘ভল্টিং কুইনের’ আখ্যাও পান। রেকর্ড গড়েও পার পেলেন না আর্থিক সংকটের নিষ্ঠুরতা থেকে। চাকরির খোঁজে গত বছরের জুলাই মাসে ঠাঁই নেন দুবাইয়ে। গৃহকর্মীর কাজ করেন সেখানেই। শ্রীলংকার মুদ্রা সংকটের পর মায়ের চিকিৎসার খরচ জোগাতেই বেছে নেন এ কাজ। দ্য ন্যাশনাল নিউজ।
পেরেরা সবসময় তার দেশ ও দেশের জনগণকে বিশ্ব মঞ্চে তুলে ধরার জন্য একটি পদক জিততে চেয়েছেন। ভল্টিং কুইনের আগে জিমন্যাস্টিক ছিলেন পেরেরা। ২০১৪ সালে গ্লাসগোতে কমনওয়েলথসহ আন্তর্জাতিক ইভেন্টগুলোতে তার দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন।
২০১৭ সালে পোল ভল্টে স্থানান্তরিত হন তিনি। জিমন্যাস্টিক অনুশীলনের কঠোরতা তাকে পোল ভল্টে স্থানান্তরিত করতে সহায়তা করে।
কিন্তু হঠাৎ তার মা স্ট্রোক করায় তার স্বপ্নে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটে। ভল্টিং স্বপ্নে বিরতি দিতে বাধ্য হন। এদিকে গত বছর শ্রীলংকার অর্থনৈতিক পতনের ফলে জ্বালানি, খাদ্য ও বিদ্যুতের দাম বেড়ে যায়। একদিকে দেশের অর্থনৈতিক সংকট, অন্যদিকে মায়ের চিকিৎসা। জীবনের এ পরিস্থিতে চাকরির জন্য চলে যান দুবাইয়ে। পেরেরা দিনের বেলা দুবাইয়ের একটি বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করেন ও একটি বাচ্চার দেখাশোনা করেন। তবে কাজের পরে ব্যায়াম করার জন্য আলাদা সময়ও রাখেন। মায়ের যত্নের জন্য মাসিক বেতনের বেশির ভাগ বাড়িতে পাঠান। সমালোচকদের নেতিবাচক মন্তব্যে পেরেরা বলেন, ‘ব্যক্তিগত কারণে দুবাই এসেছি। আমি আমার মা ও পরিবারের যত্ন নিচ্ছি’। শ্রীলংকার মুদ্রা সংকট ও ক্রমবর্ধমান চিকিৎসার বিল তার মায়ের দেখাশোনা করা কঠিন করে তুললেও স্বপ্ন দেখা ছাড়েননি পেরেরা।
দুবাইয়ে যাওয়ার পর সেখানকার সংবাদমাধ্যম দ্যা ন্যাশনালকে দেওয়া প্রথম সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ধাপে ধাপে আমি উড়ব। আমি কাজ করব। আমার স্বপ্ন আবার ওড়ার জন্য।’ শ্রীলংকার সরকার তার জীবনের গল্পে নজর দিয়েছেন; যা পেরেরার জন্য একটি কল্যাণকর সমাপ্তি হতে পারে।