সার্স ভাইরাসের তথ্য ফাঁসকারী চীনা চিকিৎসকের মৃত্যু
সার্স মহামারী যখন সবে শুরু হয় তখন ডা. জিয়াং একটি চিঠি লিখে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস সম্পর্কে সতর্ক করে বলেছিলেন, কীভাবে কর্মকর্তারা গণস্বাস্থ্যের উপর ভয়াবহ এই হুমকিকে অবজ্ঞা করছেন। সাহস করে সত্য সামনে এনে বহু মানুষের প্রাণরক্ষায় ভূমিকা রাখার জন্য পরে তিনি বিশ্বজুড়ে দারুণ প্রশংসিত হন। যদিও শুরুতে সত্য ফাঁস করার জন্য তাকে গৃহবন্দি হতে হয়েছিল।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী, ২০০৩ সালে বিশ্বজুড়ে আট হাজারের বেশি মানুষ সার্স ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। মারা গেছে ৭৭৪ জন। ওই বছর এপ্রিলে বেইজিংয়ের একটি হাসপাতালে কাজ করতেন ডা. জিয়াং। সেসময় তিনি চীনের স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে ফুসফুসের নতুন রোগ সার্স ভাইরাস সম্পর্কে জনগণকে তথ্য দিতে গিয়ে হাতেগোণা মাত্র কয়েকজন এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলতে শুনে শঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। সার্স ভাইরাসে আক্রান্তদের ফুসফুসে মারাত্মক প্রদাহ দেখা দেয়।
২০০৩ সালের এপ্রিল মাসে যখন চীনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী অল্প কয়েকজন এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার কথা বলেছিলেন, সে সময় শুধুমাত্র সামরিক হাসপাতালের ওয়ার্ড গুলোতেই একশর বেশি এই রোগে আক্রান্ত রোগী ভর্তি ছিল বলে জানিয়েছিলেন এই চিকিত্সক।
এ পরিস্থিতিতে তিনি চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমে একটি চিঠি পাঠিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া তথ্য মিথ্যা বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংবাদমাধ্যম তার সে চিঠি প্রকাশ না করে বরং অবজ্ঞা ভরে উড়িয়ে দেয়। পরে বিদেশি সংবাদমাধ্যমে ওই চিঠি ফাঁস হয়ে যায় এবং তারা তার পুরো চিঠি প্রকাশ করে।
ডা. জিয়াংয়ের এই উদঘাটনের পর চীন সরকার স্বীকার করতে বাধ্য হয় যে, সার্স ভাইরাস নিয়ে তারা মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। ডব্লিউএইচও তড়িত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। রাতারাতি কঠোর নিয়ন্ত্রণ বিধি জারি হয়। যা ভাইরাস সংক্রমণের গতি ধীর করতে সহায়তা করে।