Our Concern
Ruposhi Bangla
Hindusthan Surkhiyan
Radio Bangla FM
Third Eye Production
Anuswar Publication
Ruposhi Bangla Entertainment Limited
Shah Foundation
Street Children Foundation
May 17, 2024
Homeবিনোদননজরুলের গান বিকৃতির অভিযোগ সমালোচনার মুখে এ আর রাহমান

নজরুলের গান বিকৃতির অভিযোগ সমালোচনার মুখে এ আর রাহমান

নজরুলের গান বিকৃতির অভিযোগ সমালোচনার মুখে এ আর রাহমান

ব্রিটিশদের নিপীড়ন থেকে সাধারণ মানুষের মুক্তির জন্য লেখনীর মাধ্যমে বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম। ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’ গানেও তিনি বলেছেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের কথা। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে এ জনপদের বিভিন্ন সংকটে মানুষকে উজ্জীবিত করেছে এ গান। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধেও অনুপ্রেরণার অন্য নাম হয়ে উঠেছিল ‘ভাঙার গান’। গানটি নতুনভাবে সুর করে সমালোচনার মুখে পড়েছেন অস্কারজয়ী ভারতীয় সংগীত পরিচালক এ আর রাহমান।

সদ্য মুক্তি পাওয়া বলিউডের ‘পিপ্পা’ সিনেমায় ব্যবহার করা হয়েছে গানটি। শুধু সংগীত নয়, এ আর রাহমান বদলে দিয়েছেন গানের ধরন ও সুর। গীতিকার হিসেবে নজরুলকে ক্রেডিট দিলেও কম্পোজার হিসেবে লেখা হয়েছে এ আর রাহমানের নাম। গেয়েছেন রাহুল দত্ত, তীর্থ ভট্টাচার্য, পীযূষ দাশ, শালিনী মুখোপাধ্যায়, দিলাশা চৌধুরী, শ্রয়ী পালসহ কলকাতার একাধিক বাঙালি শিল্পী।

নজরুলসংগীতের এমন সুর পরিবর্তন মেনে নিতে পারছেন না পশ্চিমবঙ্গের নজরুল সংগীতশিল্পীরা। এ আর রাহমানের এমন কাণ্ডে অবাক হয়েছেন তাঁরা। সমালোচনার ঝড় বইছে সোশ্যাল মিডিয়ায়ও। এ আর রাহমানের পাশাপাশি এ গানের শিল্পীদেরও শুনতে হচ্ছে সমালোচনা। তবে এ বিষয়ে নিশ্চুপ এ আর রাহমান। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি। সমালোচনার রেশ আছড়ে পড়েছে বাংলাদেশেও। গানের সুর পরিবর্তন করার বিষয়টি ভালোভাবে নিতে পারেননি আমাদের দেশের নজরুলসংগীতশিল্পী ও শ্রোতারা। জোর প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তাঁরা। অনেকের মতে, এ আর রাহমান রীতিমতো ‘ক্রাইম’ করেছেন। সরকারিভাবে এর প্রতিবাদ জানানো উচিত বলে মনে করছেন তাঁরা।

সুজিত মোস্তফা

‘কারার ঐ লৌহ কপাট’ কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত গান। এই গান সঙ্গে নিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি। বিভিন্ন আন্দোলনে এই গান আমরা ব্যবহার করি। এটার মধ্যে হাত দিতে হবে কেন? এ আর রাহমান যে গানটি করেছেন, সেটা মূল সুরের ধারে-কাছে নেই। একদমই ভিন্ন একটা সুর। এই সুরের মধ্যে গানের স্পিরিটটাও আসেনি। সিনেমায় গানটি তিনি ব্যবহার করতেন মূল সুর ঠিক রেখে। তাঁর মতো করে মিউজিক করতেন। তাতে তো কোনো সমস্যা ছিল না। আমি মনে করি, এ বিষয়ে সরকারিভাবে প্রতিবাদ করা এবং গানটি দ্রুত সরিয়ে ফেলা উচিত। প্রয়োজনে এ আর রাহমানকে বলা উচিত, তুমি গানটি আবার বানাও। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, নজরুল এখনো কপিরাইট আইনের আওতায় আছেন। এ আর রাহমানের এ গানে সেটাকে পুরোপুরি লংঘন করা হয়েছে। তবে আমি জানি না, এ ক্ষেত্রে নজরুলের পরিবারের কাছ থেকে তারা কোনো অনুমতি নিয়েছেন কি না।

শাহীন সামাদ

খুব দুঃখজনক। গানটি শোনার পর আমি সাংঘাতিকভাবে আপসেট। শোনার পর একেবারে অবাক হয়ে গেছি। এ কী সুর! কাজী নজরুল ইসলামের গানে ইচ্ছামতো সুর বসিয়ে গানটি করেছেন। এমনটা করলে তো হবে না। এ আর রাহমান অনেক বড় সংগীত পরিচালক হতে পারেন, কিন্তু এতবড় ধৃষ্টতা তিনি কীভাবে দেখালেন! এটা তাঁর নিজস্ব সুর নয় যে যেমন খুশি সেভাবে করে ফেললেন। ওনার তো এটা জানা উচিত, এটি একজন জাতীয় কবির গান। তিনি নিজে এমন সুরে গানটি করেছেন। এ আর রাহমান কেন এই সুর পরিবর্তন করবেন? তিনি কোনোভাবেই এটা করতে পারেন না।

এটা বিরাট ক্রাইম। এ বিষয়টিকে প্রশ্রয় দিলে ভবিষ্যতেও এ রকম হতে থাকবে। ছায়ানটে সবাই মিলে এটা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। এখনো অনেকেই বিষয়টি জানে না। ছায়ানটের শ্রোতার আসরে এই বিষয়ে কথা বলব। সবাইকে বলব প্রতিবাদ করার জন্য। সবাই একত্র হয়ে প্রতিবাদ করতে হবে। শুধু নজরুলসংগীতশিল্পীরাই নন, যাঁরা নজরুলকে ভালোবাসেন, তাঁদের সবার উচিত এই প্রতিবাদে শামিল হওয়া।

খায়রুল আনাম শাকিল

এ আর রাহমানের মতো এত বড় মাপের একজন সুরকার একটা দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সৃষ্টিকর্মকে চরমভাবে অসম্মান করেছেন। আমরা এই বিষয়টির তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আমরা আশা করছি, সরকারিভাবেও এটির প্রতিবাদ হবে। শুধু

তা-ই নয়, আদালতে এই সমস্যাটি উপস্থাপন করে এই গানটি যেন বাংলাদেশের কোনো জায়গায় প্রচার-প্রসার না হতে পারে, সেইভাবে একটি রিট পিটিশন হওয়া উচিত। আমরা একটি স্মারকলিপিও ভারতীয় হাইকমিশনের কাছে পেশ করব বলে আশা করছি। সমস্ত সংগীতশিল্পীকে নিয়ে আমরা একটা প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করব। আমাদের যে ঐতিহ্য, সেই ঐতিহ্যের সংগীতকে এভাবে অপমান করার অধিকার কারও নেই, সে যত বড় সুরকারই হোক। যেসব সৃষ্টিকর্ম কাজী নজরুল ইসলামের নিজের হাতে করা, পাশাপাশি আরও কিছু সুরকার তাঁর গান সুর করেছেন তাঁর অ্যাপ্রুভাল নিয়ে, সেগুলো আমরা সংরক্ষণ করব। শুধু সেইগুলোরই প্রচার-প্রসার করব।

Share With:
Rate This Article
No Comments

Leave A Comment