Our Concern
Ruposhi Bangla
Hindusthan Surkhiyan
Radio Bangla FM
Third Eye Production
Anuswar Publication
Ruposhi Bangla Entertainment Limited
Shah Foundation
Street Children Foundation
May 13, 2024
Homeআঞ্চলিকবিয়ের আসরেই তালাক!

বিয়ের আসরেই তালাক!

বিয়ের আসরেই তালাক!

স্থানীয় বাজারে একট চক্ষু সেন্টারে চিকিৎসকের সহকারী হিসেবে কাজ করেন হাফেজ মো. শফিকুল ইসলাম (২৪)। সেখানে নিয়মিত মায়ের চোখ দেখাতে যাওয়ায় স্বামী পরিত্যক্তা এক নারী ভিক্ষুকের সাথে তার পরিচয় হয়। মানবিকতাবোধ থেকে বিনা পয়সায় চিকিৎসা করান তিনি। এক রাতে মায়ের চোখের ব্যাপক সমস্যা দেখা দিলে রাতে ওই নারী ফোন করে শফিকুলকে ডেকে নেন নিজ বাড়িতে। সেখানে যাওয়ার পর আগে থেকে ওত পেতে থাকা এলাকার একটি চক্র ঘরে প্রবেশ করে ওই শফিকুলকে আটকে অনৈতিক কাজ করেছে অজুহাতে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে। অন্যথায় বিয়ে করানোর হুমকি দেয়। এক পর্যায়ে কাজি ডেকে এনে গভীর রাতে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে জোরপূর্বক বিয়ে নিবন্ধন করায় চক্রটি।

পরে ফাঁদে ফেলে শফিকুলের পরিবারের কাছ থেকে পাঁচ লাখ ৭৫ হাজার টাকা আদায় করে ওই বিয়ের আসরেই কয়েক ঘণ্টা পরেই গতকাল শনিবার ভোরে নারী ভিক্ষুকের সঙ্গে তালাকের ব্যবস্থা করে। লজ্জায় ও অপমানে শফিকুল নিজের গ্রামে মুখ দেখাতে পারছেন না। অপরদিকে তার পরিবার এ ঘটনার বিচারও পাচ্ছে না। ঘটনাটি ব্যাপক প্রচার হলে ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে চক্রটি ওই নারী ও তার মাকে আজ রবিবার বাড়ি থেকে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য করে।

গত শুক্রবার রাতে এমন ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের দত্তপুর গ্রামে। ওই নারীর নাম জোসনা বেগম (৪৫)।

জোসনা বেগমের পাশের বাড়ির বাসিন্দা মোছা. জুবেদা খাতুন বলেন, ‘জোসনা ও তার মা ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালান। জোসনার একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। অন্যদিকে তরুণের নাম মো. শফিকুল ইসলাম। তিনি ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মগটুলা ইউনিয়নের নাউড়ি গ্রামের বাসিন্দা। একই ইউনিয়নে মধুপুর বাজারে দ্বীন ভিশন চক্ষু সেন্টার ও চশমা বিক্রির তার একটি দোকান রয়েছে। ওই দোকানে চোখের চিকিৎসক এসে রোগী দেখেন।’

আজ রবিবার নান্দাইল উপজেলার দত্তপুর গ্রামে গিয়ে জোসনার বাড়ি তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। এ সময় পাশের বাড়ির লোকজনের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করার সময় সাত-আটজন তরুণ একযোগে জোসনার বাড়িতে প্রবেশ করে। তারা এই প্রতিবেদকের কাছে জোসনার বাড়িতে আসার কারণ জানতে চায়। সবুজ মিয়া (২৫) নামে এক তরুণ দাবি করেন, ‘শফিকুল ইসলাম জোসনার বাড়িতে এসে ধরা খেয়েছেন। তাই আমরা ইউপি সদস্য মিলন মিয়ার নেতৃত্বে অনেক গ্রামবাসী মিলে তাদের দুজনের বিয়ে পড়িয়ে দিয়েছি।’

বিয়ের কয়েক ঘণ্টা পর ওই তালাক হলো কিভাবে―এ প্রশ্নের উত্তরে সবুজ বলেন, ‘সেটি জানি না।’ বিয়েটি কী টাকা আদায়ের কৌশল ছিল কিনা প্রশ্ন করা হলে সবুজ টাকা নেননি বলে জানান।

এ সময় মোটরসাইকেলে করে সেখানে ছুটে আসেন দত্তপুর এলাকার ইউপি সদস্য মো. মিলন মিয়া। তিনিও এখানে আসার কারণ জানতে চেয়ে প্রতিবেদককে জানান, শফিকুল ইসলাম এখানে অসামাজিক কাজ করতে এসেছেন। তাই নারীর সাথে বিয়ে পড়িয়ে দিয়েছেন।

এখানে কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে আইনের সহায়তা নিতে পারতেন। কেন নেননি প্রশ্ন করলে ইউপি সদস্য মিলন মিয়া বলেন, ‘আমরা এলাকার ম্যাজিস্ট্রেট। বিচার-আচার আমরাই করব।’

Share With:
Rate This Article
No Comments

Leave A Comment